রিব্র্যান্ডিং হল কোম্পানিকে একটি নতুন পরিচয় দেওয়ার জন্য ওয়েবসাইট, মেসেজিং, লোগো, নাম; অর্থাৎ সামগ্রিক ব্র্যান্ড ইমেজে পরিবর্তন আনাI এটি মূলত একটি বিপণন কৌশল যার লক্ষ্য একটি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি তার পণ্য ও সেবার একটি নতুন পরিচয় দেওয়ার মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে আরও প্রাসঙ্গিক বা আকর্ষণীয় হয়ে উঠা। পরিশেষে কোম্পানি তার আয় বাড়াতে সক্ষম হয় I
রিব্র্যান্ডিং এর প্রয়োজন কেন হতে পারে?
রিব্র্যান্ডিং এর ছয়টি প্রয়োজনীয় কারণ এখানে বর্ণনা করা হলো:
- ইমেজের সংস্করণ: যদি কোনো কোম্পানির ব্র্যান্ড ইমেজ পুরানো দেখায় বা তার টার্গেট ভোক্তাদের কাছে তেমন একটা পছন্দের না হয়, তাহলে একটি রিব্র্যান্ড তার ইমেজকে আধুনিক করতে সাহায্য করতে পারে।
- ব্যবসার দিক পরিবর্তন: যদি একটি কোম্পানি তার ফোকাস বা অফার পরিবর্তন করে, তবে গ্রাহকদের কাছে এই পরিবর্তনটি তুলে ধরতে সাহায্য করে I
- আইনি সমস্যা: যদি একটি কোম্পানি আইনি সমস্যা বা ট্রেডমার্ক নিয়ে বিরোধের সম্মুখীন হয়, তাহলে আইনি জটিলতা এড়াতে একটি রিব্র্যান্ডের প্রয়োজন হতে পারে।
- একত্রীকরণ: যদি একটি কোম্পানিকে অন্য কোম্পানির সাথে একত্রিকরনের দরকার হয়ে থাকে, তবে একটি নতুন পরিচয় তৈরি করতে সহায়তা করে থাকে I
- স্থানিক সম্প্রসারণ: যদি কোন কোম্পানি তাদের পণ্য ও সেবার সরবরাহ নতুন নতুন এলাকাতে বা বিশ্বব্যাপী বৃদ্ধি করে থাকে তবে তার প্রতিফলন ব্র্যান্ডিং নিয়ে আসতে হবে , যেমন, ব্র্যান্ডের নাম এবং ছবি বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ভাষায় ভালোভাবে অনুবাদ নিশ্চিত করার জন্য একটি রিব্র্যান্ডের প্রয়োজন হতে পারে।
- ম্যানেজমেন্টে পরিবর্তন: নতুন ম্যানেজমেন্ট এসে কোম্পানির জন্য তাদের দৃষ্টি প্রতিফলিত করার জন্য বাস্তবায়ন করতে চাইতে পারে।


সামগ্রিকভাবে, একটি রিব্র্যান্ড কোম্পানিগুলির জন্য তাদের ভাবমূর্তি পরিবর্তন করতে, নতুন গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিতে একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে I
রিব্র্যান্ডিং’র কোন সফল উদাহরণ আছে?
এখানে বিশ্বখ্যাত কিছু কোম্পানির উদাহরণ দেখানো হয়েছে যাতে করে আমরা সহজে চিনতে এবং বুঝতে পারি :
- Google to Alphabet Inc.: 2015 সালে, Google Alphabet Inc নামে একটি নতুন মূল কোম্পানি গঠন করে একটি বড় ধরনের রিব্র্যান্ডিং করা হয়। পরিবর্তনটি Google-কে তার মূল ব্যবসায় ফোকাস করার অনুমতি দেয়, যখন অন্যান্য উদ্যোগগুলি Alphabet-এর মধ্যে পৃথক সংস্থার অধীনে সংগঠিত করা হয়।
- উবারের লোগো এবং ব্র্যান্ড রিফ্রেশ: 2016 সালে, উবার রাইড সেবা একটি নতুন লোগো এবং ব্র্যান্ড পরিচয় উন্মোচন করেছে। একটি বিলাসবহুল কালো গাড়ি সেবা থেকে বিস্তৃত করে গণ মানুষের জন্য একটি গণপরিবহনের আদলে নতুন রূপরেখা প্রদান করা হয়I নতুন লোগোতে পরিবহন সেবাকে আরও জ্যামিতিক এবং বিমূর্ত ভাবে দেখানো হয়েছে। তখন এর লক্ষ্য ছিল পরিবহন সেবাকে বিস্তৃত প্লাটফর্মে দেখিয়ে কোম্পানির বিবর্তন কে প্রতিনিধিত্ব করা I
- Airbnb এর পরিবর্তন: Airbnb প্রথমে ভ্রমণ পিপাসু এবং যাদের প্রয়োজন তাদের জন্য থাকার বন্দোবস্ত করে বিছানা বা কক্ষ ভাড়া দিয়ে ক্ষুদ্র পরিসরে তাদের কাজ শুরু করে I 2014 সালে তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা আরো প্রসারের উদ্দেশ্যে তারা একটি রিবেন্ডিং করে থাকে I নতুন লোগো সহ তাদের ব্যবসায়ের আরও প্রসারিত গন্তব্যের কথা ব্যক্ত করে, অনলাইন মার্কেটপ্লেসে তাদের অবস্থানকে সুদৃঢ় করেI নতুন লোগোটিতে আরও সরলীকৃত এবং আইকনিক ডিজাইন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা একটি হৃদয়, একটি অবস্থান পিন এবং অক্ষর “A” এর সংমিশ্রণের অনুরূপ।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সংঘটিত কোম্পানির রিব্র্যান্ডিং প্রচেষ্টার এগুলো এগুলো কয়েকটি উদাহরণ। কোম্পানির নাম, লোগো, ভিজ্যুয়াল আইডেন্টিটি, মেসেজিং এবং কৌশলগত দিক পরিবর্তন সহ বিভিন্ন উপাদান এই রিব্র্যান্ডিং গুলোতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
রিব্র্যান্ডিংকে Coderscrown কিভাবে গুরুত্ব দিয়ে থাকে?
Coderscrown এর কাছে একটি রিব্র্যান্ডিং এর গুরুত্ব নতুন ব্র্যান্ডিং থেকে কোন অংশে কম নয়I
রিব্র্যান্ডিং এর সময় Coderscrown যে বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে:


- উদ্দেশ্য পরিষ্কার করা: রিব্র্যান্ডিংএর মাধ্যমে আপনি কী অর্জন করতে চান তা নির্ধারণ করে ব্র্যান্ড সচেতনতা বাড়ানো, নতুন ভোক্তাদের লক্ষ্য করে আপনার ব্র্যান্ডের নতুনত্ব আনা I
- গবেষণা এবং বিশ্লেষণ: বর্তমান ব্র্যান্ডের উপস্থিতি, ভোক্তাদের পছন্দ এবং বাজারের প্রবণতা বোঝার জন্য পুঙ্খানুপুঙ্খ বাজার গবেষণা এবং প্রতিযোগী বিশ্লেষণ পরিচালনা করা ও সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়া ।
- ভোক্তা টার্গেট করা: আপনার টার্গেট করা ভোক্তা এবং তাদের চাহিদা চিহ্নিত করে রিব্র্যান্ডিং করা I অর্থাৎ আপনার টার্গেট করা ভোক্তা আর আপনার নতুন ব্র্যান্ডের পরিচয়, মান, পছন্দ এবং আকাঙ্ক্ষার সাথে সমন্বয় করা I
- ব্র্যান্ড আইডেন্টিটি এবং পজিশনিং: একটি স্পষ্ট এবং আকর্ষণীয় ব্র্যান্ড তৈরি করা যা আপনার কোম্পানির মূল্যবোধ, ব্যক্তিত্ব এবং অনন্য বিক্রয় কৌশলকে প্রতিফলিত করে।
- সামঞ্জস্যতা: ভিজ্যুয়াল উপাদান (লোগো, রঙ, টাইপোগ্রাফি), মেসেজিং, শব্দ, স্বর এবং গ্রাহকের অভিজ্ঞতা সহ সমস্ত বিষয়গুলোর মধ্যে ধারাবাহিকতা রক্ষা । ধারাবাহিকতা ব্র্যান্ড স্বীকৃতি তৈরি করতে সাহায্য করে এবং ভোক্তাদের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বস্ততা বৃদ্ধি করে।
- স্টেকহোল্ডার অ্যালাইনমেন্ট: রিব্র্যান্ডিং প্রক্রিয়া জুড়ে মূল স্টেকহোল্ডারদের, যেমন কর্মচারী, অংশীদার এবং বিনিয়োগকারীদের জড়িত করে তাদের উদ্বেগ বা প্রশ্নের সমাধান করা ।
- বাস্তবায়ন পরিকল্পনা: বিভিন্ন চ্যানেল এবং টাচপয়েন্ট জুড়ে রিব্র্যান্ডিং বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ এবং সময়রেখার দিয়ে একটি বিশদ পরিকল্পনা তৈরি করে ওয়েবসাইট আপডেট, সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল ও মার্কেটিং, প্যাকেজিং, বিজ্ঞাপন সামগ্রী এবং অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের মতো বিষয়গুলি বিবেচনা করা।
- মূল্যায়ন এবং প্রতিক্রিয়া: নিয়মিতভাবে রিব্র্যান্ডিং প্রচেষ্টার প্রভাব নিরীক্ষণ এবং মূল্যায়ন করে থাকে। গ্রাহক, কর্মচারী এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে মতামত সংগ্রহ করে প্রয়োজনে প্রয়োজনীয় সমন্বয় করা।
মনে রাখবেন, রিব্র্যান্ডিং হল একটি প্রক্রিয়া যার জন্য সতর্ক পরিকল্পনা, সম্পাদন এবং পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন। একটি সফল রিব্র্যান্ডিং কৌশল নিশ্চিত করতে ব্র্যান্ডিং বিশেষজ্ঞ বা সংস্থার কাছ থেকে পেশাদার সহায়তা চাওয়ার উপকারিতা রয়েছে I Coderscrown এই কাজে দীর্ঘদিন ধরে সিদ্ধহস্ত I